তখন সকাল ৩ঃ৩০ হবে, ফোন বেজে উঠল। ওটাকে সকাল না বলে রাত বলাই ভাল। কিছু না, দেবব্রত ফোন করে আমায় পাতি ঘুম থেকে তুলে দিল। সারারাত কাজ করতে হবে, কোন সমস্যা নেই, কিন্তু ভোরে ঘুম থেকে উঠতেই আমার ভাই যত প্রবলেম। সত্যি বলতে বিছানা ছাড়াটা যে কি কষ্টের কাজ, এ বলে বোঝাতে পারবো না। আমার বাড়িতে আমার বৌ হল চলতা ফিরতা অ্যালার্ম। ওকে ফাঁকি দেওয়া খুব মুশকিল। যাইহোক, ৪ঃ৩০ তা নাগাদ দেহটা নিয়ে উঠে পড়তে হল বউয়ের গুঁতোতে। কি বলবো, উঠেই দেখি সে খাবার, জামাকাপড় সব রেডি করে রেখেছে। সত্যি ও না থাকলে আমার মত এক আধপাগল লোকের যে কি হত। হাওড়া থেকে ধরতে হবে ধউলি-এক্সপ্রেস, তাড়াতাড়ি না করলে উপায় নেই।
বৌ- এর কথা যে শুনিনি, তাড়াতাড়ি না ওঠার ফলে, কোনরকমে নাকে মুখে গুঁজে বেরিয়ে পড়তে হল। সকালে হাওড়া যাওয়াটা খুব কষ্টের না হলেও, সকালের কলকাতা দেখতে দেখতে একটু সময় নষ্ট করে ফেলেছিলাম। যখন গিয়ে পৌছালাম, দেখি ৫ঃ২৫ বেজে গেছে ঘড়িতে। ওরেব্বাস, কি লম্বা টিকিটের লাইন। এত লোক এলো কোথা থেকে এত ভোরে, যাবেই বা কোথায়? এত জেনে কাজ নেই, বেশ তাড়াতাড়িই টিকিট পাওয়া গেল বালাসরের জন্য। এতক্ষণে, ট্রেনের চাকা ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে। কোনমতে লম্ফজম্ফ দিয়ে চেপে বসলাম ট্রেনে। এতো চাপের মধ্যেও দেবব্রতর বারবার ফোন করাটা আমাকে বিরক্ত করে তুলছিল। যাইহোক, ট্রেন এ বসতে না বসতেই আবার দেবব্রত ফোন করে আমার ল্যাপটপটা একবার দেখে নিতে বলল। কি আর করা যায়, অগত্যা ওটাকে অন টন করে একটু ই-মেল গুলো দেখে নিলাম। এবার ওকে আমি ফোন করলাম, আমার যে ক্যামেরাটি ঠিকঠাক কাজ করছে জানাতেই, ও হেসে ফেলল। এবার আমার পালা ছিল ওকে মনে করিয়ে দেবার, যে কাজ শেষ হলে আমাদের ঘুরতে যাবার প্ল্যানটা। ৯ঃ৪৫ নাগাদ গিয়ে পৌঁছলাম বালাসর স্টেশনে গিয়ে। নামা মাত্রই দেখতে পেলাম সদাহাস্য দেবব্রতকে। স্টেশনে বসেই কিছু কাজ ল্যাপটপে ঘুছিয়ে নিলাম। তারপর, বেরিয়ে পরলাম DRDO (Defence Research and Development Organisation)-এর পথে। ওহ্ ভুলে গেলাম বলতে, কাজের ফাঁকে একটু পেট পুজোটা সেরে নিলাম। ধাইকিরিকিরি দের রাজ্যে, কচুরিটা খেয়ে খুব একটা পরতা হয়নি। সবেতেই যেন উরে উরে ছাপ। বেশ গরম, সূর্য্যিমামার তখন বেশ তেজ। কিছু তো আর উপায় নেই, চেপে বসলাম অটোতে। ঐ ভোরে, উরে গান শুনতে শুনতে পৌঁছেও গেলাম গন্তব্যে। যত তাড়াতাড়ি পারা যায় কাজ শেষ করলাম। বারবার আমাকে টানছিল সেই অদ্ভুত বীচ্।
বেড়িয়ে পরলাম বহু প্রতীক্ষিত সেই জায়গা দেখবো বলে। কথা মতন চাঁদিপুর বীচে যাবার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা দেবুর করে রাখার কথা। বেড়িয়ে শুনি ও কিছু করে রাখেনি। এই শুনে, আমার মাথা গেল গরম হয়ে। দেবুর একটা অসীম ক্ষমতা আছে, রাগ ঠাণ্ডা করার। যথারীতি আমাকে তৈলাক্ত করে ঠাণ্ডা করল সে। শুরু করলাম হাটা, বাপরে কি গরম। মাথা, গা সব ফেটে যাবার উপক্রম। জনমানব শূন্য রাস্তাঘাট, তার মধ্যে নেই কোন গাড়ি। তাহলে যাবো কি করে? পা যে আর চলছে না। হঠাৎ, দেখা পেয়ে গেলাম এক লরির। হাত দেখিয়েই দেবুই বাদ বাকিটা সামলে নিল। বিষ মাল দেবু, আমাকেও উঠতে বাধ্য করল বেটা। উঠেই, লরির ড্রাইভার এর থেকে একটা সিগারেট ম্যানেজ করে নিল। বেশ কিছুটা যাবার পর আমাদের একটা মোড়ে নামিয়ে দিল লরির ড্রাইভার। ওখান থেকে আবার হাটা পৌছনো যাবে চাঁদিপুর, আর সত্যি ভাল লাগছিলো না। মনে হচ্ছিলো ছেঁড়ে দে মা, চাঁদিপুরকে চাঁদে রেখে আসি। মাছের বাজার, লোকের বাড়ি, নালা নর্দমা পেরিয়ে ঝাউ বনের মধ্যে এসে পরলাম। বেশ লাগছিলো, ঝাউ গাছের ছায়া খানিকটা শান্তি দিল। গলা ফেটে যাচ্ছিল জল তেষ্টায়, আবার ১ নম্বরটাও পেয়েছিল। যত সব উল্টো পাল্টা ঘটনা আমার সাথেই হয়। আমার সব কথা আবার, আমার বৌ বিশ্বাস করে না। ও ভাবে আমি রসিয়ে রসিয়ে বলার জন্য ঢপ্ মারছি। বিশ্বাস করুন এ সব হয় আমার সঙ্গে। যেমন গাছেরা কথা বলে, পোকারা নাচে, পাখিরা আমাকে চড় মেরে আকাশে উড়ে যায়, এ সব হয় আমার সাথে। এত সব হবার পর চাঁদিপুর বীচের ওপর নেমে পরলাম। যা কেলো!!!! সমুদ্র কই ?? এতো ধু ধু করা মরু প্রান্তর। দিলাম ধরে দেবুকে !! শালা, কোথায় এনেছিস ? সমুদ্র কই ? নিয়ে আয়ে সমুদ্র। ও বলল চলো ও দিকটা যাই, ওদিকেই হবে। আবার হাঁটতে হবে ? কি করা যায়……মনে মনে দেবুকে গালাগালি দিতে দিতে হাটা দিলাম। এই দ্যাখতো, ঐ লাল লাল কি দেখা যাচ্ছে? বললাম দেবুকে। দেবু আমাকে বলল, দুর বাবলাদা !!!!! ওগুলোতো লাল ক্যাঁকরা। দ্যাখোনি কোনদিন? দেখেছিরে পাগলা, “একটা লাল ক্যাঁকরা গেলে আরেকটা লাল কাঁকড়া পাওয়া যায়নারে পাগলা” – এতো ক্যাঁকরা দেখিনি বাপের জম্মে। তালসারি বীচ-এ দেখেছি অল্প কিছু, এত নয়। এতো লাল চাদর লাগছে। বলা মাত্রই, দেবু রেলা মারা শুরু করল। বলতে লাগলো, আমার সাথে থাকো আয়েশ করবে তুমি………এই ঐ নানান ডায়লগ মারতে শুরু করল। সমুদ্র না থাকার কষ্ট সত্যি ভুলে গেলাম। কৃষ্ণ যেমন প্রচুর রকম কেলি করেছেন, আমিও, সে রকম না হলেও কাঁকড়াকেলি করতে শুরু করলাম। পাশ দিয়ে একজন জেলে যাচ্ছিল, জিজ্ঞাসা করলাম “সমুদ্রো কাহা পে গায়া”? উত্তর এলো উরেহিন্দিতে “ভাগ গায়া, ধাই কিরি কিরি আয়েগা” ওয়েট কারো।
দেবুর থেকে জানলাম, ঘোড়ার-খুরের মত দেখতে এক ধরনের কাঁকড়া এখানে পাওয়া যায়। ব্যাস বলা মাত্রই আমার মাথা গেল বিগড়ে। দেখতেই হবে সেই কাঁকড়া, ও বলল এই ভাবে তুমি দেখবে কি করে? বললাম চল খুঁজি। ঠিক পাওয়া যাবে, বং-ব্লগার এসেছে বলে কথা। ওদের আসতেই হবে। না ! ওদের দেখা পেলাম না। এই সব করতে করতে প্রায় ৩ টে বেজে গেলো। খিদেদে পেটে ছুঁচো ডন বৈঠক মারা শুরু করে দিয়েছে। সত্যি এবার কিছু খেয়ে নেয়া দরকার। মন চাইছিলনা বীচ্ থেকে যেতে, কিন্তু যেতে হল।
যতক্ষণ, আমি খাচ্ছি এবং ফিরে আসছি বীচে, এই ফাঁকে এখানকার দু এক কথা বলে নি। আমার আবার সেই জায়গার ইতিহাস নিয়ে একটু না বললে ঠিক হজম নেহি হোতা হ্যাঁয়। বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী যতিন চন্দ্র মুখার্জি যিনি বাঘা যতিন নামে পরিচিত, তিনি একবার এখান থেকে গ্রেফতার হন। সেই সময় চাষাখান্দা গ্রামে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা একটি বাড়িতে অস্ত্র মজুদ রাখত। একবার, সেখানে যাবার পথে ব্রিটিশরা বাঘা যতিনকে দেখে ফেলে এবং গুলি চালায়। দুটি গুলির আঘাতে উনি গুরুতর ভাবে আহত হন। এরপর, ঐ অবস্তায় সাহসী বাঘা যতিন বুদ্ধবালাঙ্গা নদী সাঁতরে পার হয়ে যান। ঐ গ্রামে গিয়ে পৌঁছান কোনমতে এবং এক ডাক্তার তার শরীর থেকে গুলি গুলো বার করে দেন। এরপর ওখান থেকে বেরিয়ে তিনি নিজেদের আস্তানায় যাবার সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হবার দরুন অজ্ঞান হয়ে যান এবং সাদা হনুমানের দল তাঁকে গ্রেফতার করে। একথা ভাবলে, আজও মন ভারি হয়ে যায়।
ফেরা যাক, আবার ঝাউ এর বন পেরিয়ে বালির রাজ্যে। পুরো বীচ্ জুড়ে কাঁকড়া আর আমরা দুজন। সে যেই বীচই হোক, মানুষজন না থাকলে কেমন যেন লাগে। দেবু একটু ল্যাপটপে ই-মেল চেক করে নিল ওখানেই বসে। এরপর, ওর পুরনো কিছু ছবি আমাকে দেখাতে থাকল। আমিও সেই সব ছবি দেখতে দেখতে নানান কোথায় ডুবে গেলাম। হঠাৎ, মনে হল দুরে সাদা রঙের ফেনার মত দেখা যাচ্ছে। দেবু দেখে, সাথে সাথে বলল সমুদ্র আসছে। আসলে, ভাঁটার সময় সমুদ্রের জল ৫ কিমি অব্দি সরে চলে যায়। আবার জোয়ার এলে ফিরে আসে। এ এক অদ্ভুত প্রকৃতির খেলা। চোখের সামনে দেখতে পেলাম আসতে আসতে জল বাড়তে বাড়তে বাড়তে বাড়তে পুরো একটা গোটা সমুদ্র জন্ম নিল। এ এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা, এ যে না দেখবে নিজের চোখে, তার বোঝা ভীষণ কঠিন। এর মধ্যে দু চার জন এসে পরেছে বীচে। আমি ও দেবু কিছুক্ষণ জলে আদিখ্যেতা করলাম, যা হয় আরকি। সন্ধ্যে নেমে এলো, আমার ফেরার ঘণ্টা বাজিয়ে। হাল্কা অন্ধকার যেন ঝাউবনে গভীর হয়ে নামলো। তার মধ্যে দিয়ে হাটা শুরু করলাম। একটু গা ছমছমে ভাব, তবুও বেশ লাগছিলো। বিদায় জানালাম চাঁদিপুরকে।
এখনও সম্পূর্ণ বিদায় দান হয়নি। এলাম স্টেশানে, এসে দেখি মারাত্মক ভিড়। পরপর দুটো ট্রেন ছেড়ে দিতে বাধ্য হলাম। রিসার্ভেশন নেইতো, উঠতে হবে জেনারাল বগিতে। দশটার পর বাধ্য হয়ে উঠে পরলাম ট্রেন এ। কি ভিড় কি ভিড়, বাপরে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বালাসর থেকে এলাম হাওড়া। বাড়ি ঢুকলাম তখন বাজে ভোর ৪ টে। বেচারা বৌ আমার তখনও আমার জন্য জেগে।
কি কি করবেন বা দেখবেন
A) বলরামগড়ি গ্রাম
বুদ্ধবালাঙ্গা নদীর সঙ্গমে অবস্থিত একটি গ্রাম। যদি মাছ খেতে বা ধরতে ভাল বাসেন তাহলে অবশ্যই ঘুরে আসুন এই গ্রামে। বেশ বড় একটা মাছের বাজার আছে এই গ্রামে, খুব সস্তায় নানান মাছ পাওয়া যায়। তাছাড়া, গ্রামটির পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম, যেদিকে চাইবেন সবুজ আর সবুজ। শহরেতো এতো সবুজ দেখা পাওয়া মুশকিল, তাই শহুরে মানুষদের বেশ লাগবে।
B) সোনারপুর চক্
সোনারপুর চক্ হল স্থানীয় বাজার, যা বিচ্ থেকে মাত্র ১ কিমি দুরে অবস্থিত। হরেক রকম জিনিস পাওয়া যায় এখানে। কমদামে পেয়ে যাবেন স্থানীয় হস্তশিল্পের জিনিস ও ঝিনুকের তৈরি নানান গহনা। সন্ধ্যে বেলায় ঘুরে আসতে পারেন মন্দ লাগবে না।
C) বীচ্ ফেস্টিভাল
ওড়িশায় অবস্থিত প্রায় সব বীচেই বীচ্ ফেস্টিভাল অনুষ্ঠিত হয় বছরের কোন না কোন সময়। চাঁদিপুর বীচেও ফেস্টিভাল হয়, নির্দিষ্ট কোন সময় না থাকলেও বছরের কোন একটা সময় বেছে নিয়ে অনুষ্ঠানটি হয়। আসে পাশের নানান ঐতিহ্য কে তুলে ধরা হয় নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
চাঁদিপুরের আসেপাশে কোথায় যেতে পারেন
A) পঞ্চলিঙ্গেশ্বর
পঞ্চলিঙ্গেশ্বর মন্দির চাঁদিপুর বীচ্ থেকে মাত্র ৩০ কিমি দুরে অবস্থিত। মন্দিরটি তে পাঁচটি শিবলিঙ্গ আছে। কথিত আছে স্বয়ং মা সীতা এই লিঙ্গ গুলোকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ওখানে একটি জলপ্রপাত আছে যার নাম দেবকুন্ড, এরই একটি জলের ধারা তে ধুয়ে যায় শিবলিঙ্গ গুলি।এই জলপ্রপাত থেকেই সৃষ্টি হয়েছে একটি মনোরম ছোট হ্রদ। এখানে রয়েছে নীলাগিরি জঙ্গল (ভুল করবেন না,এটা কিন্তু নীলগিরি নয়) পায়ে পায়ে ঘুরে আসতে পারেন।
চাঁদিপুর বা বালাসর স্টেশন থেকে অটো/গাড়ি সবই পাবেন।গাড়ি নিলে খরচ পরবে ৫০০ থেকে ৬০০ তাকা।আর অটো তে গেলে খরচ পরবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এখানে থাকার ব্যবস্থা খুব বেশি নেই। যদি থাকতে চান আগে থেকে বুকিং করার প্রয়োজন আছে,তা নাহলে অসুবিধায় পরবেন।
B) কুলডিহা বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য
কুলডিহার জঙ্গল ওড়িশার বালাসর জেলার অন্তরগত এবং বালাসর স্টেশন থেকে প্রায় ৮০ কিমি দুরে অবস্থিত। এই জঙ্গলটির মধ্যেই ন্যাটো ও সুখুপাটা পাহাড় পরছে যা সিমলিপাল জাতীয় উদ্যানের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপন করছে। যাইহোক, এখানে আপনি হাতি, বাঘ, বাইসন এবং নানান ধরনের পাখি দেখতে পাবেন। যারা ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি করে তাদের জন্য আদর্শ জায়গা। বিনা অনুমতিতে এই বন্যপ্রান অভয়ারন্যে প্রবেশ নিশেধ,তাই আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে ঘোরার জন্য।
চাঁদিপুরের সরাইখানা
চাঁদিপুর হল হোটেলে ঘেরা একটা জায়গা এবং হোটেল ব্যবসার স্বর্গরাজ্য। যে দিকে তাকাবেন সেখানেই চোখে পরবে হোটেল এবং পাওয়াও যায় বেশ সস্তায়। কোন বিশেষ দিন ছাড়া হোটেলে জায়গা পাওয়া খুবই সহজ। আগে থেকে বুকিং করার কোন দরকারই নেই। কোন বিশেষ দিনে যেতে চাইলে বেশ কিছুদিন আগে থাকতে হোটেল বুকিং করে নেবেন। তা না হলে কিন্ত হোটেল পেতে নাজেহাল হতে হবে। সস্তা থেকে দামি সব রকমেরই হোটেল পাবেন চাঁদিপুরে। দরদাম করবেন মন খুলে, তাতে অনেক ভালও হোটেল মিলবে বেশ সস্তায়।
কি ভাবে যাবেন
অবস্থান
চাঁদিপুর হল ওড়িশার উত্তর উপকূলবর্তী বঙ্গোপসাগরের একটি বীচ্। এর নিকটবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শহর হল বালাসর ,ঐতিহাসিক দিক থেকেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এক সময় কলিঙ্গ রাজ্যের অঙ্গ ছিল এই শহর ( মধ্য- পূর্ব ভারতের রাজত্যকালের শুরুতে এটির বেশিরভাগ অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল ওড়িশায় ,কিছুটা অংশ পরেছিল অন্ধ্র প্রদেশে এবং কিছুটা ছত্তিসগড়ে) এবং মুঘল রাও এই শহরের ওপর আক্রমণ চালিয়েছিল। ব্রিটিশ- ভারতে বন্দর শহর হিসেবে এর গুরুত্ব বেড়েছিল। যাইহোক, বালাসর কলকাতা থেকে মাত্র ২৫৫ কিমি এবং রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে মাত্র ২০৭ কিমি দুরে অবস্থিত।
সড়কপথে
চাঁদিপুরের সাথে কলকাতার সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব মন্দ নয়। বেশ ঘনঘন বাস ছাড়ে কলকাতার ধর্মতলার শহীদ মিনার এর কাছ থেকে। এছাড়া রয়েছে প্রাইভেট কার, তাতে অবশ্য ভাড়া বেশি। কলকাতা থেকে চাঁদিপুরের দূরত্ব ২৫৫ কিমিঃ এবং যেতে লাগে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা।
আকশ পথে
বিজু পট্টনায়েক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট চাঁদিপুরের সব থেকে কাছে অবস্থিত, যেটি রয়েছে ভুবনেশ্বরে। তাই চাঁদিপুর উড়োজাহাজে যেতে হলে আপনাকে ভুবনেশ্বরেই নামতে হবে।
রেল পথে
চাঁদিপুর আরামে এবং কম খরচে যেতে হলে ট্রেন এ করে যাওয়াই বেস্ট। সকালের দিকে বেশ কয়েকটা ট্রেন ছাড়ে হাওড়া থেকে। তবে ধউলি-এক্সপ্রেস ধরলে ভাল হয়। বালাসর (বালেশ্বর নামেও পরিচিত) স্টেশন থেকে চাঁদিপুরের দূরত্ব ১৬ কিমি। স্টেশনের সামনে থেকে অটো / গাড়ি পেয়ে যাবেন।
চাঁদিপুর বীচের সব ছবি দেখুন
বিশেষ কৃতজ্ঞতা স্বীকার – ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ দেবব্রত সেন ওরফে দেবু তোকে, তুই না থাকলে দিনটা এত ভাল হত না।
যদি আপনি আপনার নিজের ছবি এখানে দেখতে পান এবং তাতে যদি আপনার কোন রকম আপত্তি থাকে তাহলে অবশ্যই ই-মেল করে আপনি উপযুক্ত প্রমাণসহ আপনার দাবি জানাতে পারেন।দাবিটি ন্যায্য প্রমাণিত হলে, সে ক্ষেত্রে ছবিটি সরিয়ে ফেলা হবে।
ভালো লাগল। সুন্দর সাজানো। কিছু বানান সংশোধন দরকার।