কাশ্মীরনামাঃ অমরনাথ ট্রেকিং সম্বন্ধীয় তথ্য

Amarnath Holy Cave in Amarnath, Jammu and Kashmir, India

অমরনাথ যাত্রা
ব্যাপ্তিকাল– ৫ দিন (জম্মু থেকে জম্মু)
সমুদ্রপৃষ্ঠ হইতে উচ্চতা (সর্বাধিক) – ১৪০০০ ফুট
সমুদ্রপৃষ্ঠ হইতে উচ্চতা(সর্বনিম্ন) – ৯০০০ ফুট – ৯৫০০ ফুট
নতিমাত্রা – ৪০ – ৪৫ ডিগ্রি গড়, ৫৫ – ৬০ ডিগ্রি সর্বাধিক
তাপমাত্রা – -২/-৫ সেলসিয়াস থেকে ১০ সেলসিয়াস, জুলাই থেকে অগাস্ট এর মধ্যে
যাত্রার সময়সূচি – পূর্বনির্ধারিত ঘোষিত দিনে প্রতি বছর যাত্রা শুরু হয়। সাধারনত, প্রতিবছর জুলাই মাসের প্রথম দিকে যাত্রা শুরু এবং অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি যাত্রা শেষ হয়। মনে রাখতে হবে প্রতিবছর শুরু ও শেষের দিন পরিবর্তিত হয়।
কতটা কঠিন – এটা সম্পূর্ণ আপনার ওপর নির্ভর করছে।
শারীরিক সক্ষমতা – আপনাকে ফিট হতেই হবে, এটা খুব দরকারি।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
কোথায় থাকবেন – তাঁবু/লঙ্গর/ভান্ডারা (আপনাকে আলাদা ভাবে তাঁবু নিতে হবে না)। ওখানে তাঁবু ভাড়ায় পেয়ে যাবেন জনপ্রতি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচে।
সর্বশেষ রেশন – আপনাকে আলাদা করে খাবার বহন করতে হবে না। বিনাখরচে লঙ্গর/ভান্ডারা থেকে তীর্থ যাত্রীদের জন্য নানান খাবারের আয়োজন থাকে।
কেরোসিন– যেহেতু আপনাকে রান্না করতে হচ্ছেনা তাই আলাদা করে কেরোসিন নেবার প্রয়োজন নেই।
মোবাইল নেটওয়ার্ক – মনে রাখবেন প্রি-পেড মোবাইল জম্মু ও কাশ্মীরে কোথাও কাজ করেনা। তাই, পোস্ট-পেড মোবাইল অবশ্যই দরকার। আপনি পোস্ট-পেড মোবাইলের সিম জম্মু ও কাশ্মীরে গিয়েও কিনতে পারবেন। আপনার যাত্রা পারমিটের একটি অংশ মোবাইলের সিম কেনার জন্য থাকে। সেই অংশটি নিয়ে গিয়ে দোকানে জমা দিলে তার পরিবর্তে পোস্ট-পেড মোবাইলের সিম কিনতে পারবেন, যার জন্য আপনাকে সর্বাধিক ২০০ টাকা খরচ করতে হবে। এবার বলি, BSNL এর নেটওয়ার্ক শেষনাগ অব্দি পাওয়া যায়, অন্য টেলিকম অপারেটর নেটওয়ার্ক চন্দনওয়ারি অব্দি কাজ করে। যদি আপনি বালতাল দিয়ে যান, সে ক্ষেত্রে অন্য টেলিকম অপারেটর নেটওয়ার্ক বালতাল অব্দি কাজ করবে কিন্তু BSNL এর নেটওয়ার্ক ডোমেল অব্দি কাজ করবে।

ট্রেক রুটের সারাংশ

দুটি পথ দিয়ে অমরনাথ মন্দির/গুহায় পৌঁছান যায়, একটি চন্দনওয়ারি হয়ে এবং আরেকটি বালতাল হয়ে। যদি আপনি, অমরনাথ যাত্রা পরম্পরা মেনে করতে ইছুক হন তাহলে পরম্পরাগত রুট হল চন্দনওয়ারি থেকে যাত্রা করা। যেহেতু বালতাল দিয়ে যাত্রা করলে দিনের দিন যাত্রা করে ফেরা যায় তাই আজকাল বহু মানুষ ঐ দিক দিয়ে যাত্রা করতে পছন্দ করছে।

উপায় ১ – চন্দনওয়ারি থেকে
১. জম্মু থেকে পহেলগাঁও, খানাবাল হয়ে যান গাড়িতে/বাসে/শেয়ার করা গাড়িতে
২. পহেলগাঁও থেকে চন্দনওয়ারি যাবেন গাড়িতে/শেয়ার করা গাড়িতে।(চন্দনওয়ারি অব্দি রাস্তা আছে, এরপর রাস্তা শেষ)
ট্রেকিং -এর সময়কাল – ৩ দিন (২ দিন লাগবে অমরনাথ মন্দিরে পৌছতে এবং ফিরে আসতে লাগবে ১ দিন বালতালে)
দূরত্ব – ৩৪ কিমি (চন্দনওয়ারি থেকে অমরনাথ বেস্‌ ক্যাম্প)
মোট দূরত্ব – ৫৫ কিমি (যদি আপনি বালতাল দিয়ে নামেন এবং বালতাল বাস/কার স্ট্যান্ড অব্দি যান)/তা নাহলে, ৭২ কিমি (যদি আপনি আবার চন্দনওয়ারির পথেই ফিরে আসেন)

রুট
Chandanwari Route Details for Amarnath Yatra - Jammu and Kashmir , India
বিঃদ্রঃ– অমরনাথ বেস্‌ ক্যাম্প থেকে অমরনাথ মন্দিরের/গুহার দূরত্ব প্রায় ২ কিমি।


উপায় ২ – বালতাল থেকে

১. জম্মু থেকে শ্রীনগর গাড়িতে/বাসে/শেয়ার করা গাড়িতে যেতে হবে।
২. শ্রীনগর থেকে বালতাল, সোনামার্গ হয়ে যান গাড়িতে/বাসে/শেয়ার করা গাড়িতে (বালতাল অব্দি রাস্তা আছে, এরপর রাস্তা শেষ)।
অথবা
৩.
জম্মু থেকে বালতাল যান সোজা এক গাড়িতে/বাসে/শেয়ার করা গাড়িতে।
ট্রেকিং -এর সময়কাল – ২ দিন (১ দিন লাগবে অমরনাথ মন্দিরে পৌছতে এবং বালতালে ফিরে আসতে লাগবে আরও ১ দিন)
দূরত্ব – ১৪ কিমি (বালতাল থেকে অমরনাথ বেস্‌ ক্যাম্প)
মোট দূরত্ব – ৩৮ কিমি (যদি আপনি বালতালেই ফিরে আসেন)/ তা নাহলে, ৫৫ কিমি (যদি আপনি চন্দনওয়ারি দিয়ে নামেন)।

রুট
Baltal Route Details for Amarnath Yatra - Jammu and Kashmir , India

বিঃদ্রঃ – মনে রাখবেন, অমরনাথ বেস্‌ ক্যাম্প থেকে অমরনাথ মন্দির/গুহার দূরত্ব প্রায় ২ কিমি। বালতালে যেখান থেকে ট্রেকিং শুরু হয় সেখান থেকে বালতাল বাস/কার স্ট্যান্ডের দূরত্ব প্রায় ২/৩ কিমি।

আর কি কি উপায় আপনি অমরনাথ পৌছাতে পারেন

যদি কেউ মনে করে তার পক্ষে হেঁটে যাওয়া মুশকিল তবে, অমরনাথ মন্দির/গুহা অব্দি পৌঁছোবার আরও অন্য উপায় আছে। তবে তা একটু ব্যয়বহুল।

হেলিকপ্টার – আপনি হেলিকপ্টারে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আগাম টিকিট কেটে রাখা জরুরি। কারন, এতো মানুষ সেখানে যায় তীর্থ করতে যার ফলে টিকিট পাওয়া দুষ্কর হয়ে যায়। চেষ্টা করবেন এপ্রিল মাসের প্রথম দিকেই টিকিট কেটে নেবার। এখানে বলে রাখা ভাল, হেলিকপ্টার পরিসেবা কিন্তু বালতাল (নীলগ্রাথ) ও চন্দনওয়ারি থেকে পঞ্চতরনি অব্দি আছে। বালতাল থেকে পঞ্চতরনি অব্দি এক পিঠের মাথাপিছু টিকিটের দাম ২০০০ টাকা। আর যদি আপনি চন্দনওয়ারি থেকে পঞ্চতরনি যান সেক্ষেত্রে এক পিঠের মাথাপিছু টিকিটের দাম ৪৩০০ টাকা। টিকিটের ধার্য মূল্য ঠিক করে অমরনাথজী শ্রাইন বোর্ড।

টাট্টু/খচ্চর/ঘোড়া/পালকি – আপনি চলতে চলতে যেখান থেকে খুশি টাট্টু/খচ্চর/ঘোড়া/পালকি ভাড়া করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে অবশ্যই হেলিকপ্টারের থেকে খরচ কম হবে। যদি মাঝপথ থেকে ভাড়া না করে চন্দনওয়ারি বা বালতাল থেকে ভাড়া করেন সেক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারিত। এক্ষেত্রেও ধার্য মূল্য ঠিক করে অমরনাথজী শ্রাইন বোর্ড।

স্বত্ব © বংব্লগার আপনার যদি মনে হয় বা ইচ্ছা হয় তাহলে আপনি এই লেখাটি শেয়ার করতে পারেন কিন্তু দয়াকরে এর লেখকের নাম ইন্দ্রজিৎ দাস উল্লেখ করতে ভুলবেন না। ভুলে যাবেননা চৌর্যবৃত্তি মহাদায়, যদি পড়েন ধরা।

যদি আপনি আপনার নিজের ছবি এখানে দেখতে পান এবং তাতে যদি আপনার কোন রকম আপত্তি থাকে তাহলে অবশ্যই ই-মেল করে আপনি উপযুক্ত প্রমাণসহ আপনার দাবি জানাতে পারেন।দাবিটি ন্যায্য প্রমাণিত হলে, সে ক্ষেত্রে ছবিটি সরিয়ে ফেলা হবে।

বং ব্লগার

"বং ব্লগার" একজন আস্ত পাগল, অশিক্ষিত, জ্ঞানগম্য হীন ট্রাভেলার। পথের সম্বল সামান্য পুঁজি যা মাঝে মাঝে জোটেও না, আর মনে অজানাকে জানার ও দেখার তীব্র আকাঙ্ক্ষা। হয়ত, সবটাই ভোরের স্বপ্ন, তাতে কি যায় আসে? হয়তো সবটাই কাল্পনিক, তাতেও কি কিছু যায় আসে? সবটা মিলিয়েই আমি চিৎকার করে বলতে চাই, আমি "বং ব্লগার"।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 2 =

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.