সব চরিত্র কাল্পনিক………………মনে হয়[না]। উদর কা পিণ্ডি বুদর কা ঘাড় মে করকে বানায়া। এটাই ডিস্ক্লেমার।
অনেক হল এবার চলো প্লিস, হা করে দাঁড়িয়ে থেকো না !! দাড়াও ছবি তোলা তো শেষ হয়নি। একটা সেলফি নি সোনা, চেপে দাড়াও না বাঘটা আসছে না তোমার সাথে, ঠিক করে দাঁড়াতেও পারেনা, এই ক্যাবলা ছেলে কোথাকার !! একটু চেপে গিয়ে প্রনাম করুন না প্লিস !! দুর মুখটা একটু তোল না দুগ্গা ঠিক আসছেনা তোমার পেছনে !! (সেকিরে ভাই দুর্গা পেছনেও আসে?)
ওর তো বিয়ে হয়নি সিঁদুর কি খেলবে ? দুর মা……………রররররররা চুপ করতো, মালটার মুখটা হেবি !! সিঁদুর লাগিয়ে আরও ভাল লাগছে !! ছবি তোল আর পেছনটা যেন ঝাপসা হয় ওটা মাথায় রাখিস।
কি আর করবো? এসব দেখতে দেখতেই পূজো কেটে গেলো আমার। আমার বৌ এর শখ ছিল আমি ক্যামেরা নিয়ে বেরোই। তা আর হয়ে উঠল না। বৌ নিজেই বলল ফুটোগ্রাফাররা নিজেরাই সাবজেক্ট হয়ে উঠছে !! ছাড়ো তোমায় আর বেরতে হবে না। যাইহোক, আমাকে বেরতে হয়েছিলো। বেড়িয়ে যা তুলেছি তাঁর স্বাদটা ভাগাভাগি করে নিতে চাই সবার সঙ্গে। আমার তোলা এক ঢিপি ছবি থেকে কিছু ছবি এ বছরের দুর্গা পূজোর ঝুলি থেকে………………।।
দিন অষ্টমী
আমি বাইকে আর আমার সামনের বাইকে বসে থাকা নব বঁধুর গলায় নিকনের দড়ি।
আমি রাস্তায় ওরাও রাস্তায়, গিজ গিজ করছে ঝুলন্ত ব্যাবিলন। ভাগ্যিস সাথে বৌ ছিল, অন্য কেউ সাথে থাকলে সে ছবি ফেসবুক এর হাত ধরে পৌঁছে যেত বউয়ের দেওয়ালে।
এতে একটা সুবিধাও আছে। এক সাথে এতো DSLR ক্যামেরার মডেল এক ঝলকে দেখতে পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। এছাড়া কত মোবাইল, আইপ্যাড, আইফোন জাস্ট গড়াগড়ি খাচ্ছে।
দিন দশমী
তুমি কি আসছ আজ বাগবাজারে? আমি তিন চার বছর ধরে আসছি সিঁদুর খেলার ছবি তুলতে। চলো যাই দেখা হবে। দেখ আমি কিন্তু ছবি তুলবো না, তুমি তুলো। নয়, আমি তোমায় চাটবো আর তুমি অন্যদের চেটো।
সকালটা বউয়ের, দুপুরটা নাহয় অমিতাভদার নামে উৎসর্গ করা যেতেই পারে।
যাইহোক, বেড়িয়ে পরা হল বউয়ের ঝাঝানি খেয়ে।
দৃশ্য ১ – তুমি আমার ছবি তোল, আমি তোমারটা তুলবো। প্লিস্, কি যে করছ। প্যান্ড্যালটা দারুন হয়েছে, সব কিছুর সঙ্গে আমার ছবি নেব। একটাও ভাল ছবি আসছে না ডিপি করার জন্য।
দৃশ্য ২ – সবার গলায় নানান রঙের দড়ি। কারুর গলায় হলুদে লেখা কালো দড়ি, তো কারুর গলায় সাদায় লেখা কালো দড়ি। সেখানে আমার সদ্যজাত পুঁচকে ক্যামেরা নেহাতই সামান্য।
বা…..আ.আ..আ……….র কি প্যান্ড্যাল করেছে রে ভাই, ছবি তোল স্যাটা স্যাট্। আমাকে নিয়ে তোল ভাই………………ফেসবুকে ছাড়িস ভাই আজকেই। দুগ্গার সাথে একটা ভাল ডিপি নে না প্লিস্।
কি অসাধারন করেছে প্যান্ড্যালটা, জাস্ট অকল্পনীয়। ক্যামেরাটা বার করনি কেন গো? বার করো তাড়াতাড়ি। দেওয়ালের কাজ গুলো ঠিক করে তোল, মায়ের খুব পছন্দ হবে। এক সময় মা, মন্দির নিয়ে তার শিল্প নিয়ে, পাথর টাথোড় নিয়ে কত কি করেছে বাপরে! তোমার হয়ে গেলে, আমার একটা ডিপি তুলে দিওনা। তুমি মোবাইলে তোলনা, বড় ক্যামেরা থেকে মোবাইলে দিতে, অনেক ব্যাপার আছে। ও তুমি বুঝতে পারবেনা। তুলে দাওওওওনা। আমার ফ্রন্ট ক্যামেরাটা মাত্র ১৩ মেগাপিক্সিল, ভাল আসেনা। আমারটাতেও তুলে দিও, দেওয়ালের কারুকাজ গুলো একটু।
দৃশ্য ৩ – দেখ !! দেখ !! ময়ূরটা কি দারুন করেছে। সবাই তুলছে ময়ূরের সাথে আমায়ও তুলে দাও। দিদি হল? একটু ময়ূরটা ছাড়ুন না।
দুর বাবা !! কতক্ষণ দাঁড়াব এটার সাথে !! দাড়াও তুমি পুরো আসছ না যে (80-200mm lens)।
এই সব শুনতে শুনতে আর দেখতে দেখতে সকাল গেলো চলে।
দুপুরে মৃদু ভাষী ও মৃদু গলার মানুষ অমিতাভদার ফোন…………………।। আমি এসে গেছি, তুমি কোথায়?
দৃশ্য ৪ – আজ বললাম শাড়ি পরে এসো, এবার দেখ মজা। গালে একটু সিঁদুর লাগাতে, ফটাফট ছবি হতো। ছাড়, কাল যা করেছো আমার সাথে, তার পর এসব আমার আসতো না। দেখেছি !! তোমার একটু ন্যাকা মেয়েদের পছন্দ। ওলে বাবা, সনু বাবা………… করে বলবে !! শুনে রাখ, এসব আমার থেকে এক্সপেক্টও করোনা।
একটু দারান না !! ঠিক আছে !! ঠিক আছে !! আপনি একটা হাত সিঁদুরে, আরেকটা একটু বুকে রাখুন। (সে কি রে ভাই?)
আপনার বাচ্চা আছে ! বাচ্চাটা কোলে রাখতেই হবে? ওকে কাউকে দিয়ে দিননা, আপনারটা তুলেই আপনাকে ছেড়ে দেবো। (ধরে কি করবি রে ভাই? পরের বৌ তো)
ঝোপ থেকে যা দুটো ছবি নিলাম না তোমার !! তুমি দেখলে, যা চাইবো তাই দিয়ে দেবে। (ভাই পানু তুলিসনি তো?)
দৃশ্য ৫ – আপনি কি ম্যারেড? এ মা না না, ক্লাস ১১ এ পরি। (বিয়ের খুব শখ তোর?) এখানে প্রায় সবাই আনম্যারেড, আপনি আমায় জিজ্ঞাসা করলেন কেন? (ফোন নাম্বারটা নেবে বলে, মনেহয়)
তোমাকে তখন থেকে দেখছি, খালি মেয়েদের ছবি তুলছ। এই জন্যই কি ক্যামেরা নিয়ে এসেছ? একটু লজ্জা রাখো, তোমার সাথে তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে। (লজ্জা কি রাখা যায়?)। এবার দাও আমি তোমার ছবি তুলেদি। আরে এটা আমার নতুন ক্যামেরা !! তুমি পারবে না পুচু !
আপনার সাথে আপনার বর আছে? শিট, না না আমি আনম্যারেড। বয়ফ্রেন্ড আছে? একসাথে তোলা যাবে? হ্যাঁ হ্যাঁ সিওর সিওর !! এই, মধুরিমা একটু অম্লান কে ডেকে দেনা। ও তো এখনও আসেনি। ধ্যাত, তাহলে জয় কে ডেকে দে না প্লিস্। (সে কি রে উনিতো বয়ফ্রেন্ড বলেছেন, বয়ফ্রেন্ডস বলেননি)। যিনি আসছেন উনি কে? ও আমার বয়ফ্রেন্ডই। ছবি তুলুন প্লিস্ !! ভাল ভাল তুলবেন কিন্তু।
অমিতাভদার আগমন। কয়েকটা নিলাম বুঝলে। এবার কি একটু কফি খাওয়া যায়? চলো যাই, খেয়ে আসি। চলো অমিতাভদা, শোভাবাজারের একটা স্বঘোষিত রাজবাড়ি আছে, ওটা থেকে ঘুরে আসি। তুমি কোথায় একটা যাবেনা? যাবো যাবো !!
দৃশ্য ৬ – দেওয়ালের থাম গুলো দেখেছ? কি দারুন না গো? থামের সাথে ছবি নিয়ে ফেসবুক এ ছারি !! সসসসবাই অবাক হয়ে যাবে। (থামের থমথমানি)।
এখানে সবাই হাইফাই লোকজন। আপেলের ছড়াছড়ি ! স্টিভ জব্, মার্কেট দেখলে খুশি হয়ে যেত। (পাগলা খাবি কি, সবতো মোবাইল এ দিয়েদিলি)
হঠাৎ একজন কে দেখে, একটা গানের দুটো লাইন কানে বাজল “শ্রেণিহীন সমাজের চিরবাসনায়, দিন বদলের খিদে ভরা চেতনায়“………………………কার লেখা যে এই গানটা? সত্যি মনে পরছেনা।
যাইহোক, এবার চলা যাক। যাবার আগে যে ঢ্যামনাটা সবার সাথে ঢ্যামনামি করল, তাকে দেখতে ইচ্ছা করছেনা?
যদি আপনি আপনার নিজের ছবি এখানে দেখতে পান এবং তাতে যদি আপনার কোন রকম আপত্তি থাকে তাহলে অবশ্যই ই-মেল করে আপনি উপযুক্ত প্রমাণসহ আপনার দাবি জানাতে পারেন।দাবিটি ন্যায্য প্রমাণিত হলে, সে ক্ষেত্রে ছবিটি সরিয়ে ফেলা হবে।
শালা,আমাকেও ঢুকিয়েছে !! মার কৈলাস (ভানু বন্দোপাধ্যায়) ভাগ্যিস ডায়লগ লাগায় নি! গুরু তোমার হবে, রিয়্যালি হবে। এবং চন্দ্রিলের বাজার খাবে ইন্দ্রজিৎ দাস ।
খুব ভালো লাগল। চলতে থাকুক,শিখতে থাকি-
nice clicks.
Spirit of Pujo beautifully captured. Sorry bangla script download kora hoyeni
This is an excellent blogpost… Could have been better if there were less spelling mistakes